বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার সদর উপজেলায় বহুল আলোচিত পাহাড় কাটার দুই ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। মামলা দুইটি ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে আরও ৮ জনকে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট মো. আবদুছ ছালাম বাদি হয়ে সোমবার দুপুরে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দুইটি দায়ের করেন।
কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. কাইছার হামিদ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট আইনে মামলাটি নথিভ‚ক্ত করে অভিযুক্ত গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
এর মধ্যে কক্সবাজার বাইপাস সড়কের কলাতলী এলাকার বিকাশ বিল্ডিং এর পাহাড় কাটার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে ৪ জনকে।
এই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, উখিয়ার রাজাপালং এলাকার ছিদ্দিক আহম্মদের ছেলে মো. ইলিয়াছ, কলাতলী আদর্শ গ্রামের মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে শাহ আলম, লাইট হাউজ পাড়ার মৃত হামিদ হোসেনের ছেলে সালামত উল্লাহ, সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার মৃত আবদুল হামিদেরে ছেলে মো. ইউনুছ, হাজিপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. ফয়সাল, তারাবনিয়ার ছড়ার মৃত মো. আলীর ছেলে মো. সেলিম ও কলাতলী এলাকার মৃত জাফর আলমের ছেলে নুরুল আলম ভূট্টো।
অপরদিকে কলাতলীর সৈকতপাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার ঘটনায় দায়ের করা মামলা এজাহারে শুধুমাত্র ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা পল্লবের নাম উল্লেখ রয়েছে। যেখানে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে আরও ৪ জনকে।
গত ১১ জানুয়ারি কক্সবাজারটাইমসডটকম কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে বিকাশ বিল্ডিং এলাকা ও সৈকতপাড়ায় পাহাড় কাটার ঘটনা নিয়ে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করে।
প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসার পর রবিবার ১৪ জানুয়ারি পরিবেশ আদালত কক্সবাজারের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মোঃ আসিফ সংবাদটি আমলে নিয়ে মিস মামলা নং ০১/২০২৪ দায়ের করেন।
মামলার আদেশে আদালত উল্লেখ করেন, ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৯০(১)(গ) মতে অত্রাদালত উক্ত ঘটনা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমলে নেয়ার এখতিয়ার রাখেন। উক্ত বিষয়ে সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নয় এমন কর্মকর্তা কর্তৃক ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক ঘটনা সংঘটন সাপেক্ষে ঘটনার বিষয়ে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী ২১ জানুয়ারি স্বশরীরে হাজির হয়ে স্থিরচিত্র সহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
সংশ্লিষ্ট সংবাদ : ইউপি সদস্যকে মারধর করে জব্দ করা এস্কেভেটর লুটের ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মামলার পর পরই গত ১৫ জানুয়ারি কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কলাতলীর বাইপাস এলাকার বিকাশ বিল্ডিং থেকে একটি এস্কেভেটর জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুসের জিম্মায় দেয় প্রশাসন। একই সঙ্গে লাইট হাউজ এলাকায় পাহাড় কাটার স্পটটি সীলগালা করে দেয় প্রশাসন। কিন্তু ১৬ জানুয়ারি ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুসকে মারধর এবং অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে প্রশাসনের জব্দ করে জিম্মায় দেয়া এস্কেভেটর ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল অস্ত্রধারী। একই সঙ্গে লাইট হাউজ এলাকায় সীলগালা করে দেয়ার পর তা ভেঙে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা পল্লব।
সংশ্লিষ্ট সংবাদ : কক্সবাজারে পাহাড় কাটা বন্ধে দিনব্যাপী অভিযান
এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস বাদি হয়েছে কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা করেছে। যেখানে আসামি করা হয়েছে ৭ জনকে।
পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলস এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, কেবল মাত্র মামলা করে যেন এই দায়ভার শেষ না করে প্রশাসন। পাহাড় কাটা বন্ধে যেন সর্বোচ্চ সজাগ থাকে।
সংশ্লিষ্ট সংবাদ : অস্ত্র ঠেকিয়ে জব্দ করা এস্কেভেটর লুট আর সীলগালা ভেঙে আবারও কাটা হচ্ছে পাহাড়
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply